আসন্ন জাতীয় বাজেটে ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুরদের জন্য রেশনিং, পেনশন চালু ও কর্মসৃজন কর্মসূচি, বিধবা ভাতা, টিসিবি, স্বাস্থ্য, সন্তানের শিক্ষা এবং গ্রামীণ প্রকল্প ও কর্মসূচিতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির নেতৃবৃন্দ।
আজ ৩০ মে ২০২৫ শুক্রবার পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে গরিব মানুষ দিশেহারা। তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেও পরিবার-পরিজন নিয়ে তিনবেলা খেতে পায় না। স্বাস্থ্য, সন্তানের শিক্ষা থেকেও তারা থাকে বঞ্চিত। নেতৃবৃন্দ রেশনিং ব্যবস্থা চালু করে সকল গরিব মানুষকে চাল, ডাল, তেল, লবন, চিনিসহ নিত্যপণ্য দেওয়া ও ষাটোর্ধ্ব মজুরদের জন্য বিনা জমায় মাসিক ১০ হাজার টাকা পেনশনের জন্য আসন্ন জাতীয় বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখার দাবি জানান।
ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফজলুর রহমান। বক্তব্য রাখেন কার্যকরী সভাপতি অ্যাড. আনোয়ার হোসেন রেজা, সাধারণ সম্পাদক অর্ণব সরকার, সহ সাধারণ সম্পাদক কল্লোল বনিক, নির্বাহী কমিটির সদস্য অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, মোতালেব হোসেন, রমেন্দ্র চন্দ্র বর্মন, সুখেন্দ সুত্রধর, সদস্য ফিরোজ আলম মামুন প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা আব্দুল কাদের, সাদেকুর রহমান শামীম, আব্দুস সাত্তার, দীপক শীল প্রমুখ।

সমাবেশে ডা. ফজলুর রহমান বলেন, প্রতিবছর লক্ষ কোটি টাকার বাজেট হয় কিন্তু গরিব মানুষের দুঃখ আর যেন ঘুচে না। এবার গরিববান্ধব বাজেটের দাবি করে বলেন, ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত ও লাখ লাখ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত মহান মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের জন্য শোষণ-বৈষম্যমুক্ত একটি দেশ, সে আকাংখা পুরণ আজো হয়নি। বিগত ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানেও অতীতের মতোই সাধারণ মানুষ বেশি রক্ত দিয়েছে। অথচ তাদেরকেই তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। তিনি গ্রাম-শহরে ক্ষেতমজুর সমিতির নেতৃত্বে শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি অ্যাড. আনোয়ার হোসেন রেজা বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাংখা ‘শোষণ-বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ’ কায়েমের উদ্যোগ লক্ষণ নেই। তিনি ধনী-গরিবের বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার সংগ্রামকে অগ্রসর করার আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, ক্ষেতমজুররা এবার বঞ্চিত হলে আবার রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। গণআন্দোলন গণসংগ্রামের মধ্য দিয়েই অধিকার আদায় করতে হবে।
সাধারণ সম্পাদক অর্ণব সরকার বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে লক্ষ কোটি বরাদ্দ হলেও তার মধ্যে শুভংকরের ফাঁকি রয়ে গেছে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দে বয়ষ্ক ভাতা-বিধবা ভাতা যেমন রয়েছে তেমনি সরকারি চাকুরিজীবীদের পেনশন, মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ইত্যাদিও যুক্ত করা হয়েছে। ফলে যে বাজেট হয় তার অল্পই গরিব মানুষের জন্য ব্যয় হয়। বয়ষ্ক ভাতা বর্তমানে ৬০০ টাকা দেওয়া হয় এবং বর্তমানে তা ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৬৫০ টাকা করার কথা শুনেছি। একজন বয়ষ্ক মানুষের মাসে এ টাকা দিয়ে কি হয়?
একই দাবিতে আগামীকাল ৩১ মে শনিবার দেশব্যাপী জেলা-উপজেলায় ক্ষেতমজুর সমিতির উদ্যোগে মিছিল, সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।